শিশুটিকে কুড়ে খাচ্ছিল শত শত লাল পিঁপড়া, বাঁচালেন পুলিশ কর্মকর্তা

ডেস্ক রিপোর্ট :

পটুয়াখালীর দুমকীতে ৪ এপ্রিল নিজের মরিচক্ষেতে একটি শপিং ব্যাগ কুড়িয়ে পান পূর্বকার্তিপাশা গ্রামের সোহরাব গাজী। ব্যাগে ছিল সদ্য ভূমিষ্ঠ এক শিশু। তার রক্তমাখা শরীরটা কামড়ে ধরেছে অসংখ্য লাল পিঁপড়া। দ্রুত শিশুটিকে বাড়ি নিয়ে স্ত্রী নূরজাহান বেগমের কোলে তুলে দেন তিনি।

খবর পেয়ে দুমকী থানার পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভালো না থাকায় পটুয়াখালী হাসপাতালের শিশু বিভাগের ডা. সিদ্বার্থ শংকর শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা অথবা বরিশাল নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু দরিদ্র পরিবারটি আর্থিকভাবে সচ্ছল না থাকায় কোথাও নিয়ে যাওয়ার সাহস পাচ্ছিলেন না।

হাসপাতালে ব্যক্তিগত কাজে এসেছিলেন পটুয়াখালীর এডিশনাল এসপি (হেডকোয়ার্টার) শেখ বিলাল হোসেন। ডাক্তারের এমন পরামর্শে পাশ থেকে বলে উঠলেন চিন্তার কোনো কারণ নেই শিশুটির চিকিৎসার ভার আমি নেব। এরপর শিশুটিকে নেয়া হয় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

মনের সবটুকু অনুনয়ে শেবাচিমের শিশু বিশেষজ্ঞ ও সহযোগী অধ্যাপক উত্তম কুমারের হাত দুটি জড়িয়ে ধরে বিলাল হোসেন বললেন, ডাক্তার সাহেব শিশুটি বাঁচবে তো। আমি আপনার অনেক সুনাম শুনে মধ্য রাতে আপনার কাছে এসেছি। আপনার সম্পূর্ণ অভিজ্ঞতা দিয়ে চেষ্টা করলে হয়তো শিশুটি বেঁচে যাবে।

কথাগুলো শুনে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. উত্তম কুমার সাহা চেয়ার ছেড়ে শেখ বিলাল হোসেনের কাছে এসে হাতটি জড়িয়ে ধরলেন। এমন অনুনয়ে প্রতিশ্রুতি দিতে বাধ্য হলেন ডাক্তার।

শিশুটির শারীরিক অবস্থা নিয়ে শেবাচিমের শিশু বিশেষজ্ঞ ও সহযোগী অধ্যাপক উত্তম কুমার জানান, শিশুটির ওজন মাত্র সাড়ে ৯শ গ্রাম। অপরিপক্ব হওয়ায় কিছুটা ঝুঁকি রয়েছে। তবে অবস্থা একেবারে খারাপ নয়।

সেই থেকে শেবাচিমের আই কেয়ার স্ক্যানু বিভাগের ইউনিট-১ এ চিকিৎসাধীন। তার সব ধরনের ব্যয়ভার বহন করছেন এডিশনাল এসপি বিলাল হোসেন। এমনকি শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসা দিতে প্রতিনিয়ত ঢাকায় তার ডাক্তার বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

এ বিষয়ে পটুয়াখালীর এডিশনাল এসপি শেখ বিলাল হোসেন বলেন, একটি দরিদ্র পরিবার যদি শিশুটির পাশে দাঁড়াতে পারে তাহলে আমি কেন পারবো না?